এশিয়ার ক্রিকেটের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী দল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে যে উত্তেজনা থাকে, তার আরেকটি উদাহরণ দেখা গেল গতকাল। দুই দলের মুখোমুখি ম্যাচ মানেই দর্শকদের উত্তেজনা ও বাইশ গজে তুমুল প্রতিযোগিতা। আর এই প্রতিযোগিতায় শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ। তাওহীদ হৃদয়ের অসাধারণ ব্যাটিং ও মুস্তাফিজুর রহমান এবং রিশাদ হোসাইনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে এই জয় এসেছে। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের আউট কিছুটা চাপ বাড়ালেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছিলেন দলের নির্ভরতা। জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন সাইলেন্ট কিলার।
যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কার ইনিংস থামে ১২৪ রানে। ভালো শুরু করেও টাইগার বোলারদের সামনে টিকতে পারেনি লঙ্কানরা। ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটাররা বারবার ব্যর্থ হন। রান না করেই বিদায় নেন সৌম্য সরকার, আর তানজিদ তামিম করেন মাত্র ৩ রান। অধিনায়ক শান্তও করেন ৭ রান। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর তাওহীদ হৃদয় মাঠে এসে অসাধারণ ইনিংস খেলেন। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে পরপর তিনটি ছক্কা মেরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন তিনি। হৃদয় ২০ বল থেকে ৪০ রান করেন, যাতে ছিল চারটি ছক্কা এবং একটি চারের মার। কিন্তু তিনি আউট হলে লিটন, সাকিব ও রিশাদরা দায়িত্ব নিতে পারেননি। ৪ ওভারের মধ্যে তারা আউট হলে আবারও কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের আউট আরও চাপ বাড়ায়। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৩ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
শুরুতে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা কঠিন বার্তা দিচ্ছিল। বিশেষ করে পাথুম নিশাঙ্কা ভয়ংকর হয়ে উঠেছিলেন। ৮ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ ছিল শ্রীলঙ্কার দখলে। কিন্তু ৯ম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান নিশাঙ্কাকে আউট করলে লঙ্কানরা আর টিকে থাকতে পারেনি। নিশাঙ্কা ২৮ বল থেকে ৪৭ রান করেন।
এরপর রিশাদ, তাসকিনরা শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের দ্রুত আউট করেন। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও চারিথা আসালাঙ্কা কিছুটা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও রিশাদ তাদের আউট করে লঙ্কানদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন। রিশাদের বোলিংয়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ব্যাট ছুঁয়ে সৌম্যর হাতে যাওয়া বলটি বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মুস্তাফিজও তার ক্যারিশমা দেখিয়েছেন। নিশাঙ্কা ছাড়াও তিনি কামিন্দু মেন্ডিস ও মাহিশ থিকসানার উইকেট শিকার করেন। রান খরচেও তিনি ছিলেন সবচেয়ে মিতব্যয়ী, ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৭ রান।
পরবর্তী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১০ জুন।