ডেঙ্গু পরিস্থিতি: হাসপাতালে ভর্তি আরও ২৭ ডেঙ্গু রোগী
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে, এই সময়ে ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যু হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি: হাসপাতালে ভর্তি আরও ২৭ ডেঙ্গু রোগী
ডেঙ্গুর চলমান পরিস্থিতি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নতুন রোগীদের নিয়ে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৩০৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৪১ জন। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে গত বছর ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিল ৫ হাজার ৫৬৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৩৬ জনের। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১২৯ জন, যার মধ্যে ঢাকায় ৬৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬৫ জন।
ঢাকার বাইরে সংক্রমণ
ঢাকার বাইরের চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরগুনা, এবং নরসিংদী জেলায় ডেঙ্গুর প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে।
রোগীর সংখ্যা এবং তাদের লিঙ্গভিত্তিক পরিসংখ্যান
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩৫ দশমিক ২৪ শতাংশ ঢাকা মহানগর এবং ৬৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ ঢাকার বাইরের। আক্রান্তদের মধ্যে ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ নারী এবং ৬০ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ। মৃতদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ।
ডেঙ্গুর ইতিহাস
দেশে প্রথম ২০০০ সালে ডেঙ্গুর বড় ধরনের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এর পর থেকে সবচেয়ে বড় আকারের সংক্রমণ এবং মৃত্যু হয়েছে ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয় ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রথমবারের মতো এক লাখ ছাড়ায়, সেবছর ভর্তি হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের।
ডেঙ্গু রোগের প্রভাব এবং প্রতিরোধ
ডেঙ্গু একটি মারাত্মক রোগ যা মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এবং এর প্রভাব কমাতে ব্যক্তিগত সচেতনতা এবং সরকারী উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যেমন মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করা, মশার বংশবিস্তার রোধ করা, এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।
ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে করণীয়
১. ব্যক্তিগত সুরক্ষা: মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য মশারি ব্যবহার, ফুলহাতা পোশাক পরিধান এবং মশা নিরোধক ক্রিম ব্যবহার করা।
২. পরিবেশগত সুরক্ষা: মশার বংশবিস্তার রোধ করতে জলাবদ্ধতা দূর করা এবং বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা।
- সরকারি উদ্যোগ: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারী প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধি, রোগ শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার সুবিধা বৃদ্ধি।
ডেঙ্গু একটি মারাত্মক রোগ হলেও, সঠিক সচেতনতা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এর প্রভাব কমানো সম্ভব। ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সামাজিক এবং সরকারী সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সুস্থ এবং নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
আরও পড়ুন..