মিনিকেট চাল চিকন করতে গিয়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চাল কমে যায়
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সম্প্রতি এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন যা দেশের চাল উৎপাদন এবং খাদ্য সংরক্ষণে নতুন দিক নির্দেশনা প্রদান করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের পুরনো খাদ্যগুদামের ভারসাম্য, আধুনিকীকরণ, সম্প্রসারণ এবং প্রতিস্থাপন (বিএমআরই) কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, প্রতিবছর কৃষকের উৎপাদিত চালকে কথিত মিনিকেট করার জন্য চিকন করতে গিয়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চাল কমে যায়। ধান থেকে উৎপাদিত চাল চকচক করতে গিয়ে পাঁচবার পলিশ করা হয়, যার ফলে চালের পুষ্টিগুণও নষ্ট হয়ে যায়। মিনিকেট চাল চিকন করতে গিয়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চাল কমে যায়
মিনিকেট চালের পলিশ প্রক্রিয়ার ফলাফল
মন্ত্রী জানান, দেশে প্রতিবছর চার কোটি টন ধান উৎপাদন হয়। কিন্তু চিকন করতে গিয়ে চার থেকে পাঁচ শতাংশ চাল ওজনে কমে যায়। ফলে বছরে ১৬ লাখ টন চাল কমে যায়। মন্ত্রী আরও বলেন, যদি দুইবার পলিশ করা যায়, তাহলে চালের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি লোকসান কমবে। চাল উৎপাদনে খরচ কমার ফলে ভোক্তারা আরও কম দামে চাল পাবেন।
চালের দাম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করেই যখন চালের দাম বাড়ে তখন খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, মিল মালিকরা দাম বেশি নেয়। এজন্য তাদেরকে দাম বাড়াতে হয়। ভোক্তাদের সুবিধার্থে এখন থেকে বস্তায় ধানের জাত, ওজন, উৎপাদনের তারিখ এবং মিলগেইটে কত দাম— সেটি লিখতে হবে। যাতে করে খুচরা ব্যবসায়ী না বলতে পারেন যে, তারা বেশি দামে কিনেছেন।’
অনুষ্ঠানের অন্যান্য আলোচ্য বিষয়
উদ্বোধনী সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন মঈন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই একসঙ্গে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের এই বক্তব্য দেশের চাল উৎপাদন এবং সংরক্ষণে নতুন দিশা দেখাবে। মিনিকেট চালের পলিশ প্রক্রিয়ার ফলে যে পরিমাণ চাল কমে যায় এবং পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়, তা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যার সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হলে চালের দাম কমবে এবং মজুত বাড়বে। ভোক্তারা কম দামে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন চাল পেতে সক্ষম হবেন। তাই সরকারের এই উদ্যোগ দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আশাব্যঞ্জক।
আরো পড়ুন:
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশিদের অর্থ তুলে নেওয়ার প্রবণতা