সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল মুশফিকুর রহমান ইফাত: বিলাসী জীবনের পর্দা ফাঁস
ঈদুল আজহার আগে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলেন মুশফিকুর রহমান (ইফাত) নামের এক তরুণ। ইফাতের বিলাসবহুল জীবনযাপন নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তার বাবা ড. মতিউর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আছেন। তবে পরিস্থিতি জটিল করে তোলে যখন মতিউর রহমান তার ছেলেকে অস্বীকার করে বলেন, ইফাত তার ছেলে নয় এবং তিনি ইফাত নামে কাউকে চেনেন না।
মতিউর রহমানের সম্পদ নিয়ে বিতর্ক
মতিউর রহমানের সম্পদের উৎস নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও তার ও তার পরিবারের নামে চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নরসিংদী ও ময়মনসিংহে রয়েছে রিসোর্ট, শুটিংস্পট, বাংলো বাড়ি এবং জমিসহ নানা সম্পত্তি। ব্যাংক হিসাবে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং শেয়ারবাজারে রয়েছে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ। মতিউর রহমান নিজেই বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি বিভিন্ন কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) কম দামে কিনে পরে বেশি দামে বিক্রি করে বড় অঙ্কের মুনাফা করেছেন।
ইফাতের বিলাসী জীবনযাপন
মতিউর রহমানের ছেলে ইফাতের বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, এবং আলিশান জীবনযাপন সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা বিবরণ প্রকাশ পাচ্ছে। সরকারি চাকরিজীবী বাবার বেতনের টাকা দিয়ে এই ব্যয়বহুল জীবনযাপন কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার খবর ভাইরাল হওয়ার পর ইফাতের দামি জীবনের অনেক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
ইফাত ও তার পরিবারের সম্পর্ক
মতিউর রহমান ইফাতকে অস্বীকার করলেও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়, ইফাতের মা শাম্মী আখতার শিভলী (শিবু) মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী। শাম্মী আখতারের বাবার বাড়ি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে। শাম্মী আখতার ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য (ফেনী-২) নিজাম উদ্দিন হাজারীর আত্মীয়। নিজাম উদ্দিন হাজারী গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, ইফাত এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে।
মতিউর রহমানের কর্মজীবন ও সম্পদ
মতিউর রহমান ১১তম বিসিএসে বাণিজ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে কাস্টমস ক্যাডারে একীভূত হন। তিনি বরিশালের মুলাদি উপজেলার বাসিন্দা। তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ আগে সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন এবং পরবর্তীতে রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০২৩ সালের উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথম সংসারে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপন নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা।
ইফাতের ছাগল কেনা নিয়ে ভাইরাল হওয়ার পর মতিউর রহমানের সম্পদ ও পরিবারের বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় হওয়া এ ঘটনায় মতিউর রহমানের সম্পদের উৎস এবং পরিবারের ব্যয়বহুল জীবনযাপন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবী হওয়ার সুবাদে তার এতো সম্পদ এবং বিলাসী জীবনের ব্যাপারে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে মতিউর রহমানের ছেলেকে অস্বীকার করার বিষয়টি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
আরো পড়ুন:
সারা দেশে রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক: জরুরি নির্দেশনা দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী