প্রাচীন ভারতে যৌনজীবন সম্পর্কে ৮টি বিষয়
প্রাচীন ভারতে যৌনতা নিয়ে আমাদের সমাজের তুলনায় অনেক খোলামেলা দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। তবে সেই সময়ের কিছু আচরণ ও রীতি আমাদের কাছে আজও বিস্ময়কর বলে মনে হয়। আসুন জেনে নিই প্রাচীন ভারতের যৌনজীবন সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: প্রাচীন ভারতে যৌনজীবন সম্পর্কে ৮টি বিষয়
১. গভীর রাতে যৌন আসর
প্রাচীন ভারতের ধর্মশাস্ত্র অনুসারে, ‘চক্রপূজা’ নামে একটি খেলা প্রচলিত ছিল। এতে সমান সংখ্যক পুরুষ ও নারী একত্রিত হতেন এবং মহিলারা তাদের পোশাক খুলে এক মাটির পাত্রে রাখতেন। পুরুষরা সেই পাত্র থেকে পোশাক বেছে নিয়ে যার পোশাক পেতেন, তার সাথে রাতটি কাটাতেন।
২. বহুগামিতা ও বহুপতিত্ব প্রচলিত ছিল
প্রাচীন ভারতে বিশেষ করে শাসক শ্রেণীর মধ্যে বহুগামিতা প্রচলিত ছিল। একটি পরিবারের রক্তের বিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্যও এটি করা হতো। হিমালয়ের একটি উপত্যকায় একাধিক পুরুষ এক নারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতেন।
৩. তান্ত্রিক যৌনাচার
তান্ত্রিক যৌনাচার প্রাচীন ভারতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। এর মাধ্যমে দুটি ব্যক্তি যৌনমিলনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক জাগরণ বা ঈশ্বরের সাথে একাত্মতা অর্জনের চেষ্টা করতেন। এটি বিভিন্ন প্রকারের ছিল; এক প্রকারে সহিংসতা ও যৌনতা একত্রে চর্চা করা হতো, অন্য প্রকারে নারী সঙ্গীর সাথে ইরোটিক রিচ্যুয়াল পালিত হতো।
৪. নারীর আনন্দকে গুরুত্ব দেওয়া হতো
কামসূত্রে নারীর যৌন আনন্দকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো। এর লেখক বত্সায়ন নারীদের যৌনসুখকে অগ্রাধিকার দিতে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলেছিলেন, নারীদের সম্পর্কের বাইরে থেকেও সুখ পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
৫. যৌন শিক্ষার অগ্রদূত
ভারতীয়রা যৌন শিক্ষায় প্রাচীনকালের অন্যতম অগ্রদূত ছিলেন। কামসূত্র এ বিষয়ে লিখিত প্রাচীনতম গ্রন্থগুলোর একটি, যা যৌন আনন্দ সম্পর্কে শিক্ষিত করত।
৬. আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে যৌন সম্পর্ক
যদিও আজকের দিনে এটি ঘৃণিত বলে মনে হয়, তবে প্রাচীন ভারতে আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে যৌন সম্পর্কের প্রচলন ছিল। হারিবংশ পুরাণে ঋষি বসিষ্ঠ ও তার কন্যা শত্রুপার মধ্যে সম্পর্কের উল্লেখ পাওয়া যায়।
৭. বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্কের প্রতি সহনশীলতা
মহাভারতের আদিপর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, ঋষি পরাশর ও সত্যবতী মৎস্যগন্ধার বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্ক ছিল, এবং তাদের পুত্র ব্যাস জন্মগ্রহণ করেন।
৮. সমকামিতা তেমন শেমড ছিল না
প্রাচীনকালে সমকামিতা পুরোপুরি মুক্ত ছিল না, তবে এটি প্রচলিত ছিল। ব্রাহ্মণ ও পুরাণে সমকামিতার উল্লেখ পাওয়া যায়। মুঘল যুগে সমকামিতার কিছু উদাহরণ যেমন, মুবারক শাহ খলজি ও খসরো, সুলতান মাহমুদ গজনির দাস আয়াজ এর মধ্যে সম্পর্কের কথা জানা যায়।
প্রাচীন ভারতের যৌনজীবনের এই তথ্যগুলো প্রমাণ করে যে, সেসময়কার সমাজ যৌনতা নিয়ে অনেক খোলামেলা ও উদার ছিল, যা আমাদের বর্তমান সমাজে কল্পনাতীত।
আরও পড়ুন..