খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের স্বীকারোক্তি
শুক্রবার, ১৪ জুন, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে এক চাঞ্চল্যকর মামলার আসামি বাবু স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান আদালতে বাবুর জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে, বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের স্বীকারোক্তি: আদালতে বাবুর জবানবন্দি
আদালতের প্রেক্ষাপট
শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জালাল উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন যে, বাবু তার জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এই মামলায় ইতিমধ্যে শিমুল ভূঁইয়া ওরফে শিহাব, তানভীর ভূঁইয়া, এবং শিলাস্তি রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং তারা বর্তমানে কারাগারে আছেন।
মামলার বিবরণ
এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন যে, ৯ মে রাত ৮টার দিকে তার বাবা গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ১১ মে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ভিডিও কলে কথা বলার সময় তার বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্নতা লক্ষ্য করেন। এরপর থেকে তার বাবার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
সন্দেহজনক বার্তা
১৩ মে তার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। বার্তায় লেখা ছিল, “আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। আমি পরে ফোন দেব।” এর পরেও আরও কয়েকটি বার্তা আসে। মুনতারিন ফেরদৌস ডরিন মনে করেন, এই বার্তাগুলো অপহরণকারীরা তার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পাঠিয়েছে।
খোঁজাখুঁজি এবং মামলা
বাবার সন্ধান না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে থাকেন ডরিন। তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডরিন জানতে পারেন যে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার বাবাকে অপহরণ করেছে।
এই ঘটনাটি আমাদের সামনে দুর্যোগপূর্ণ একটি পরিস্থিতি তুলে ধরেছে যেখানে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে। বাবুকে কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তবে মামলার সত্যতা প্রমাণ করতে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোরভাবে কাজ করতে হবে।
ঢাকায় আট মাত্রার ভূমিকম্পের সতর্কতা যেমন আমাদের সচেতন হতে উৎসাহিত করেছে, তেমনি এই ঘটনাও আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে যে, অপরাধীদের হাত থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আশাকরি, এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আরো পড়ুন:
4o