সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের পূর্ণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, যেখানে নতুন নেতৃত্ব নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে আসছে। এই সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে সক্রিয়ভাবে দেশের উন্নয়নে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেছেন, তরুণ প্রজন্মই দেশ পরিচালনার কেন্দ্রে থাকবে। তরুণ প্রজন্মকে কাজে লাগাবে অন্তর্বর্তী সরকার: রিজওয়ানা হাসান
তরুণ প্রজন্মের গুরুত্ব
তরুণ প্রজন্মের ক্ষমতা, উদ্যম এবং সৃজনশীলতা যেকোনো দেশের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশের মতো একটি দেশের ক্ষেত্রে, যেখানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশই তরুণ, তাদেরকে দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তরুণ প্রজন্ম শুধু ভবিষ্যতের জন্য নয়, বর্তমানেও একটি বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। রিজওয়ানা হাসান
তরুণরা শুধুমাত্র শিক্ষিত এবং প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ নয়, তারা সামাজিক মিডিয়ায় সক্রিয়, যা তাদের একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে সক্ষম করে। তারা যেমন সামাজিক সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে, তেমনি নতুন আইডিয়া এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ করতে পারে।
নতুন সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি
রিজওয়ানা হাসানের বক্তব্য অনুযায়ী, নতুন সরকার তরুণ প্রজন্মকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে এবং তাদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করবে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, দেশের মোট জনসংখ্যার ৫০ ভাগই তরুণ, কিন্তু এই তরুণদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক ছিল না বললেই চলে।
এবারের সরকার মনে করে, তরুণ প্রজন্ম দেশ পরিচালনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের শক্তি, উদ্যম, এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।
তরুণ প্রজন্মের প্রাসঙ্গিকতা
তরুণ প্রজন্ম শুধু দেশের ভবিষ্যৎ নয়, বরং বর্তমানেও তাদের অবদান রাখছে। বর্তমান প্রজন্ম নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করেছে বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে। তারা শুধু যে আন্দোলন করে সরকার পরিবর্তন করেছে তাই নয়, বরং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অবদান রেখেছে।
তরুণরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন এবং তারা তাদের অধিকার এবং দায়িত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞানসম্পন্ন। তারা জানে কীভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং কীভাবে একটি সুন্দর সমাজ গঠন করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জ
রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেছেন যে, দেশের সংকটময় মুহূর্তে কাউকে না কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হবে। কাজটা যদি সততার সঙ্গে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে করা যায়, সেই কাজটি কঠিন কোনো বিষয় নয়। তবে এটা বলতেই হবে যে, একটি অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করা সহজ কাজ নয়।
দেশের মানুষ খুব কষ্টে আছে, বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে। শিক্ষার্থীরা যেভাবে আন্দোলন করেছে, তাতে বোঝা যায় তারা শুধু নিজের জন্য নয়, বরং সাধারণ মানুষের জন্যও লড়াই করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব বিষয় মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।
ছাত্রসমাজের ভূমিকা
বর্তমান রাজনৈতিক পরিবর্তনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পদত্যাগ ঘটিয়েছে এবং তাদের দাবিগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। ছাত্রসমাজ দেশের ভবিষ্যৎ এবং তারা নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করেছে।
ছাত্রসমাজ শুধু আন্দোলনেই নয়, বরং দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাদের মতামত, চিন্তাভাবনা এবং দৃষ্টিভঙ্গি দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তরুণদের ক্ষমতায়ন এবং দায়িত্ব
তরুণ প্রজন্মের ক্ষমতায়ন শুধু তাদের অধিকার নয়, বরং দেশের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদেরকে নেতৃত্বের ভূমিকা দেওয়া হলে তারা দেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারবে।
তরুণদের শিক্ষা, দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতি, সমাজ এবং সংস্কৃতিকে আরও উন্নত করা সম্ভব হবে।
নতুন সরকারের কর্মপদ্ধতি
নতুন সরকার তরুণদের নেতৃত্বের দায়িত্ব দিতে চায়। সরকার মনে করে, তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ এবং তাদের নেতৃত্বে দেশ একটি নতুন পর্যায়ে পৌঁছাবে।
সরকার তরুণদের জন্য বিশেষ প্রোগ্রাম এবং প্রকল্প চালু করবে, যাতে তারা নিজেদের সক্ষমতা এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা
সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সরকার মনে করে, সাধারণ মানুষ খুব কষ্ট পাচ্ছে, বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের জীবনে অনেক প্রভাব ফেলছে।
সরকার সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আন্তর্জাতিক উদাহরণ
রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ গণতান্ত্রিক হয়েছে, অনেক দেশে জবাবদিহিতামূলক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাহলে আমাদের দেশেও কেন পারা যাবে না?
তিনি মনে করেন, সততার সঙ্গে কাজ করলে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করলে, দেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্বের ভূমিকা দিতে চায় এবং তাদের সক্ষমতা এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে চায়। তরুণরা দেশের ভবিষ্যৎ এবং তারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
সরকার তাদের সঙ্গে কাজ করবে এবং দেশের সংকটময় পরিস্থিতি সমাধানে তরুণদের সম্পৃক্ত করবে।
তরুণ প্রজন্মই একসময়ের দেশের নেতা হবে এবং তাদের নেতৃত্বে দেশ আরও উন্নত এবং সমৃদ্ধ হবে।
আরো পড়ুন: