পরীমনির জীবনের অন্ধকার দিন: শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং পরীমনির মুক্তির ইঙ্গিত
ভূমিকা
ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমনি, তাঁর জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তে রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনাবলীর সাথে সম্পর্কিত ছিলেন। ২০২১ সালের ৮ জুন বোট ক্লাব কাণ্ড থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্যবর্তী সময়ে পরীমনির জীবনজুড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অনেকেই অবগত। এই ব্লগে আমরা সেই ঘটনার বিবরণ এবং পরীমনির প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বোট ক্লাব কাণ্ড ও গ্রেপ্তার
২০২১ সালের ৮ জুন, পরীমনি ঢাকার বোট ক্লাবে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তোলেন। এই অভিযোগের পর থেকে দেশের গণমাধ্যমে বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়। সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি তাঁর সঙ্গে হওয়া হেনস্তার বর্ণনা দেন। এর পরেই তাঁর বাসায় অভিযান চালানো হয়, যা তিনি লাইভ করেন।
২০২১ সালের ৪ আগস্ট, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) পরীমনিকে তাঁর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে এবং বনানী থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মাদক মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তারের দিনও লাইভে গিয়ে পরীমনি শেখ হাসিনাকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করেন এবং তাঁর কাছে সাহায্য চান। তবে, সেদিন শেখ হাসিনার সাহায্য পেলেও রেহাই পাননি তিনি।
রিমান্ড ও মুক্তি
গ্রেপ্তারের পর, পরীমনিকে তিন দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। কিন্তু ১ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান। গ্রেপ্তারের দিনটি এখনো পরীমনির জীবনের কালরাত হিসেবে রয়ে গেছে এবং সেই দিনটি তিনি কখনোই ভুলতে পারছেন না।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ
কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং সরকার পতনের এক দফা দাবির মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। তাঁর পদত্যাগের পরপরই, পরীমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভয়াল ৫ আগস্টের স্মৃতিচারণা করে লিখেন, ‘তিন বছর আগে এই ৫ আগস্ট যেভাবে আমার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল। প্রকৃতি হিসাব রাখে মা।’ এর সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের পতাকা জুড়ে দেন।
পরীমনির প্রতিক্রিয়া ও সামাজিক মাধ্যমের স্ট্যাটাস
শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর, পরীমনি সামাজিক মাধ্যমে আরও একটি স্ট্যাটাস দেন, যেখানে তিনি লেখেন, ‘শান্তি চাই! লুটপাট, থানা আক্রমণ, প্রতিহিংসা চাই না! আমরা সংযত হই, দায়িত্ববান হই। প্রিয় বাংলাদেশে আর রক্তপাত চাই না।’
পরীমনির পরবর্তী কর্মযজ্ঞ
শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরেও, পরীমনি তাঁর অভিনয় কর্মজীবন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সামনে তাঁর অভিনীত ‘রঙিলা কিতাব’ এবং কলকাতার সিনেমা ‘ফেলুবক্সী’ মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। ‘ফেলুবক্সী’তে তাঁর বিপরীতে আছেন টালিউড অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী এবং ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মধুমিতা সরকার।
উপসংহার
পরীমনির জীবনের বিভিন্ন ঘটনাবলী এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তাঁর প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে যে, জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোকে শক্তি ও সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়। তাঁর এই স্ট্যাটাসগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, প্রাকৃতিক বিচার সবসময় হয় এবং সকলের জীবনে সুবিচার আসে।
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ত্যাগ
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সংসদ ভবনে হামলা ও লুটপাট