নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। রোববার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনের উন্মুক্ত আঙিনায় জমকালো আয়োজনে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। মোদির নতুন মন্ত্রিসভায় বিহারের ছয়জন নেতার ঠাঁই হয়েছে। চলুন তাঁদের পরিচয় জেনে নেওয়া যাক। মোদির মন্ত্রিসভায় বিহারের ৬ নেতা
রাজীব রঞ্জন সিং (লালন)
রাজীব রঞ্জন সিং, যিনি লালন নামে পরিচিত, জেডি–ইউর সাবেক জাতীয় সভাপতি। তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। রাজীব সিংয়ের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য। ১৯৭৪ সাল থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় তিনি। তিনি পুরোনো জনতা দলের সদস্য ছিলেন এবং নীতীশ কুমারের গড়ে তোলা সমতা দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
মুঙ্গের থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। রাজ্য সরকারের পানিসম্পদ ও পরিকল্পনা উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ডিসেম্বরে জেডি–ইউর জাতীয় সভাপতির দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
রামনাথ ঠাকুর
রামনাথ ঠাকুর, জেডি–ইউর আরেক নেতা, ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন। তিনি বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কর্পূরী ঠাকুরের ছেলে। বিহার থেকে দুই দফায় রাজ্যসভায় প্রতিনিধিত্ব করছেন। ২০০৫ থেকে ২০১০ পর্যন্ত নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভায় একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি রাজস্ব ও ভূমি সংস্কার, আইন এবং তথ্য ও জনসংযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।
গিরিরাজ সিং
বিহারের বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং টানা তৃতীয়বারের মতো মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। বিগত সরকারে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নওডা থেকে ১৬তম লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন এবং ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে বেগুসরাই থেকে জয়ী হন। মোদির দ্বিতীয় দফার সরকারে গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত রাজ বিভাগ এবং পশুপালন ও মৎস্যসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
চিরাগ পাসওয়ান
অভিনেতা থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা চিরাগ পাসওয়ানও নরেন্দ্র মোদির নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। ৪১ বছর বয়সী চিরাগ পাসওয়ান বিহারের লোক জনশক্তি দলের (রাম বিলাস) প্রেসিডেন্ট। বিহার থেকে তৃতীয়বারের মতো লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। হাজিপুর আসন থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে আরজেডি নেতা শিব চন্দ্র রামকে হারিয়েছেন।
নিত্যানন্দ রায়
নিত্যানন্দ রায় ছাত্রনেতা থেকে সফল রাজনীতিক হয়েছেন। তিনি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) নেতা হিসেবে রাজনীতির মাঠে নেমেছিলেন। হাজিপুর আসন থেকে চারবার এমএলএ নির্বাচিত হন। এবার তৃতীয়বারের মতো লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মোদি সরকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
জিতেন রাম মাঞ্জি
দলিত প্রতিনিধি হিসেবে বিহারের এনডিএ জোটের মধ্যে অন্যতম জিতেন রাম মাঞ্জি। তিনি হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা-সেক্যুলার (এইচএম–এস) দলের প্রতিষ্ঠাতা ও বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৪ সালে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে নীতীশ কুমারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে জেডি–ইউ থেকে বহিষ্কার হন এবং এইচএম-এস গঠন করেন।
উপসংহার
মোদির নতুন মন্ত্রিসভায় বিহারের ছয়জন নেতা স্থান পেয়েছেন, যা বিহারের রাজনৈতিক গুরুত্ব ও নেতৃত্বের অবস্থানকে তুলে ধরেছে। তাদের ভূমিকা ও অবদান মোদির সরকারকে আরো শক্তিশালী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।