আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাষণ ও বার্তা
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন: “রাজনীতি করলে কি ব্যবসা করার অধিকার থাকবে না?” আজ সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই প্রশ্ন উত্থাপন করেন। আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভার স্থান পরিদর্শনের জন্য তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাষণ ও বার্তা
সৎ ব্যবসার পক্ষে ওবায়দুল কাদের
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সৎ ব্যবসা করলে আপত্তি নেই। অসৎ ব্যবসায়ী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।” সেতুমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, আওয়ামী লীগ সৎ ব্যবসায়ীর পক্ষে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রস্তুতি
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, “আমাদের শোভাযাত্রা আনন্দঘন, উৎসবমুখর হয়েছে। আগামীকাল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও স্বতঃস্ফূর্ত, সুশৃঙ্খল ও আনন্দঘন উপস্থিতি হবে এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।”
প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির হিসাব
৭৫ বছরে আওয়ামী লীগের কোনো অপ্রাপ্তি আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “অপ্রাপ্তির বিষয় সেভাবে দেখছি না। প্রাপ্তির খাতায় হিসেব করে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের অসমাপ্ত কাজ বিজয়কে সুসংহত করতে পারিনি। সাম্প্রদায়িকতা বিজয়কে সুসংহত করার পথে অন্তরায় হয়ে আছে। এই সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা ও পরাভূত করা আমাদের বিজয়কে সুসংহত করবে।”
আগামীর বার্তা
আগামীর জন্য আওয়ামী লীগের নতুন বার্তা নিয়ে কাদের বলেন, “আমাদের বার্তা নতুন কিছু না। আমরা আমাদের পার্টির নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছি, সেই ইশতেহার বাস্তবায়ন… আমরা একদিক থেকে বলতে পারি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি, এটা আমাদের অঙ্গীকার।”
উন্নয়ন কার্যক্রম
আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী উল্লেখ করেন, “আমাদের অনেক উন্নয়ন কাজ চলমান, যেমন আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো, এমআরটি লাইন ১ ও ৫, মাতারবাড়ি, পায়রা, রূপপুর এই কাজগুলো সুসম্পন্ন করতে হবে। এটাই দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা রাজনীতি করি মানুষের জন্য। মানুষের সঙ্গে ছিলাম, আছি ও থাকব।”
রাজনৈতিক প্রতিকূলতা
ওয়ান ইলেভেনের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, “সুপরিকল্পিতভাবে ওয়ান ইলেভেনে যেটা দেখেছি দেশের রাজনীতিবিদদের নিন্দিত করা, কুৎসা রটানো… এ দেশ স্বাধীন করেছে, দেশের উন্নয়ন করছে রাজনীতিবিদেরা। সেই রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিবাজ প্রমাণ করতে ও তাদের ব্যর্থ এটা প্রমাণ করতে কিছু লোক তৎপরতা চালাচ্ছে। আমরা সেটা বুঝি, এর বিরুদ্ধে প্রস্তুতও আছি।”
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য দলটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও অঙ্গীকার সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা প্রদান করে। সৎ ব্যবসা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, এবং চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রতি গুরুত্ব প্রদান—এসবই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দলের প্রতিজ্ঞাবদ্ধতা স্পষ্ট করে তুলেছেন কাদের।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, এবং কার্যনির্বাহী সদস্য আনিসুল ইসলাম, কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ।
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এসব বার্তা দলটির সমর্থকদের অনুপ্রাণিত করবে এবং তাদের ভবিষ্যতের রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে সহায়ক হবে।
আরো পড়ুন: