কোটার সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলনে সহস্রাধিক নিহত ও চার শতাধিক মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন: স্বাস্থ্য উপদেষ্টার উদ্বেগ
বাংলাদেশে চলমান কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলনের কারণে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় চার শতাধিক মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সরকারের দায়িত্ব
নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, আন্দোলনের কারণে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তাদের দায়দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। এছাড়া যারা আহত হয়েছেন, বিশেষ করে যারা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বা গুরুতর আহত হয়েছেন, তাদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এই উদ্যোগকে সরকারের একটি দায়িত্বশীল পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আহতদের চিকিৎসার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সেবা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের কথা হয়েছে। দৃষ্টিশক্তি হারানো এবং চোখে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা সেবা ফাউন্ডেশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই তাদের চিকিৎসার জন্য আন্তর্জাতিক ডাক্তারদের একটি টিম বাংলাদেশে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। এই টিম ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল এবং দিনাজপুরে চিকিৎসা প্রদান করবে।
অন্যান্য শারীরিক আঘাতের বিষয়েও সরকারের পদক্ষেপ
নূরজাহান বেগম জানান, অনেক আন্দোলনকারী পায়ে আঘাত পেয়েছেন, এমনকি কারও কারও পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এই ধরনের গুরুতর আহতদের জন্যও সরকারের তরফ থেকে বিশেষ চিকিৎসা সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিভিন্ন দাতা সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা চলছে যাতে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নিয়ে আসা যায়।
পুলিশের আহত সদস্যদের প্রতি সরকারের মনোযোগ
রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় নূরজাহান বেগম আহত পুলিশ সদস্যদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, পুলিশের অনেক সদস্য আন্দোলনের সময় মাথায় ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন এবং তাদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একজন ছাত্র সমন্বয়কও সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন এবং তার চিকিৎসাও যথাযথভাবে চলছে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
উপসংহার
কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলনকে ঘিরে দেশে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা উদ্বেগজনক। সরকারের পক্ষ থেকে আহত ও নিহতদের জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলো এ মুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে দৃষ্টিশক্তি হারানো ব্যক্তিদের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের আনার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো উচিত। বাংলাদেশের জনগণের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে আশা করা যায়।
এই ধরনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে এবং জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের আরও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
আরো পড়ুন
ম্যাডক সুপারন্যাচারাল ইউনিভার্সের ভক্ত হিসেবে, আমি অমর কৌশিকের “স্ত্রী ২” এর প্রশংসা করতে বাধ্য