ফেসবুকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্ট দেওয়ায় যুবক গ্রেপ্তার
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম (৪৩) নামে ওই ব্যক্তি একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন, যার ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে করা মামলায় জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ফেসবুকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্ট দেওয়ায় যুবক গ্রেপ্তার
ঘটনা ও গ্রেপ্তার
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল হোসেন জানান, মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পোস্ট করার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী (৭৪) এই মামলা করেন।
ফেসবুকে পোস্টের প্রেক্ষাপট
১৭ জুন সকাল ৯টা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম নিজের ফেসবুক আইডিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্ট দেন। এতে তিনি ‘কোরবানির মাংসের ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হোক’ এই দাবি জানান। এই পোস্টের ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র প্রতিবাদ জানান।
অভিযোগ ও মামলা
বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কটাক্ষ করায় হাকিমপুর থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানহানি করে পোস্ট দিয়েছেন, যা আইনের পরিপন্থী।
জাহাঙ্গীর আলমের পরিচয়
গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর আলম হাকিমপুর পৌর শহরের ধরন্দা মহল্লার সিপি রোড এলাকার মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি একসময় হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডে চাকরি করতেন। এছাড়া তিনি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলায় ‘বাংলা হোপ’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থাতেও কর্মরত ছিলেন।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
জাহাঙ্গীর আলমের ফেসবুক পোস্টের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধারা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এবং পুলিশের হস্তক্ষেপে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্ট দেওয়ার ফলে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার বিষয়ে প্রশাসনের তৎপরতা প্রমাণিত হয়। এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া হতে পারে গুরুতর এবং আইনি প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি হতে পারে।
এভাবে, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে যেকোনো মন্তব্য করার আগে সবারই সচেতন থাকা উচিত এবং সম্মানজনক ও দায়িত্বশীল আচরণ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন..