গরুর মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। গরুর মাংসে প্রচুর প্রোটিন, আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে কিছু সাবধানতা মেনে চলা প্রয়োজন যাতে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর না হয়। নিচে গরুর মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা এবং উপদেশ দেওয়া হলো: গরুর মাংস খাওয়ায় সতর্কতা
গরুর মাংস খাওয়ার সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন:
- ফ্যাট বা চর্বির দিকে খেয়াল:
- যাঁদের ওজন বেশি, ফ্যাটিলিভার, কোলেস্টেরলসহ নানা শারীরিক সমস্যা আছে, তাঁরা চর্বি বাদে মাংস খাবেন।
- চা-কফি পরিহার:
- গরুর মাংসে আয়রন রয়েছে। এ জন্য গরুর মাংস খাওয়ার পরপরই চা-কফি খাবেন না, কারণ এতে আয়রন শোষণ ব্যাহত হয়।
- কোমল পানীয় পরিহার:
- গরুর মাংস খাওয়ার পর কোমল পানীয় পান করবেন না, কারণ এতে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
- খাবারে বৈচিত্র্য আনুন:
- অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন কিডনির ক্ষতি ও শরীরে চর্বি বৃদ্ধি করতে পারে।
- অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন:
- বেশি মাংস খেলে পেটফাঁপা, পেটভারী এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। তাই সালাদ, দই, বোরহানি, ক্যাপসিকাম ও টমেটো খাবারের সাথে খান।
- মাংস ভালোভাবে সেদ্ধ করুন:
- ভালো সেদ্ধ না হলে এটি সালমোনেলা ও ই কোলি ব্যাকটেরিয়ার কারণ হতে পারে।
- উচ্চ তাপে দীর্ঘসময় রান্না নয়:
- এতে মাংসের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতা এবং ভিটামিন বি নষ্ট হয়ে যায়।
- পরিমাণে সীমিত রাখুন:
- সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত মাংস খেলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই সপ্তাহে ২ দিন বা ১৫০ গ্রামের বেশি মাংস না খাওয়াই ভালো।
- অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সতর্কতা:
- কম সেদ্ধ মাংস খাওয়া উচিত নয়, এতে টক্সোপ্লাজমার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
- বারবার গরম করে খাবেন না:
- একবারে অনেক মাংস রান্না করে বারবার গরম করে খাওয়া পুষ্টিগুণ হারাবে।
কারা কতটুকু খাবেন:
- অন্তঃসত্ত্বা বা স্তন্যদায়ী নারী, প্রচুর শারীরিক পরিশ্রমী, বাড়ন্ত বয়সের ছেলেমেয়ে, বডিবিল্ডার, অস্ত্রোপচার থেকে সেরে উঠেছেন:
- গড়ে ২০০ গ্রাম মাংস খেতে পারবেন।
- ডায়াবেটিস, ফ্যাটিলিভার, আইবিএসের সমস্যা থাকলে:
- গড়ে ২০০ গ্রামের নিচে মাংস খাবেন।
- স্ট্রোক, হৃদ্রোগ, গলব্লাডার বা কিডনির সমস্যা আছে:
- প্রথম ধাপে ১০০ গ্রামের নিচে গরুর মাংস খাবেন।
- প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা:
- দিনে ৭০ থেকে ৮০ গ্রামের বেশি খাবেন না।
- ওজন বেশি, কোলেস্টেরল খুব বেশি নয়:
- ১ থেকে ২ টুকরার বেশি মাংস খাবেন না।
শারীরিক অবস্থার ভিত্তিতে এবং পুষ্টিবিদের পরামর্শে গরুর মাংস খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। এতে শরীর সুস্থ থাকবে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে সৃষ্ট শারীরিক সমস্যাগুলো এড়ানো যাবে।
আরও পড়ুন..